কুমিল্লা নিউজ ডেস্ক।।
বিয়েবাড়িতে প্রতিপক্ষের হামলায় শুক্রবার রাতে নিহত হন নাজমা আক্তার (৫৫)। অজানা আশঙ্কা থেকেই তাৎক্ষণিক বোনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি বড় ভাই হুমায়ুন কবীর শিকদারকে (৬৫)। মৃত্যুর এক দিন পর শনিবার রাতে হুমায়ুন কবীরকে বোনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। সঙ্গে সঙ্গে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায়। হুমায়ুন কবীর শিকদার ভাওরখোলা গ্রামের মৃত আলাউদ্দিন শিকদারের ছেলে। তিনি ঢাকায় বসবাস করতেন। আজ রোববার দুপুরে ভাওরখোলা গ্রামে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বোনকে কুপিয়ে হত্যার পর বড় ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে উপজেলার ভাওরখোলা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। পরিবারটিতে চলছে মাতম।
এলাকাবাসী ও মেঘনা থানা-পুলিশ জানায়, হুমায়ুন কবীর শিকদারের বোন নাজমা আক্তারের বিয়ে হয় একই গ্রামের আবদুস সালামের সঙ্গে। সালামের ছোট ভাই সিরাজ মিয়া মেঘনা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। ভাওরখোলা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. ফারুক সরকারের সঙ্গে সিরাজ মিয়ার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। সম্পর্কে তাঁরা চাচাতো ভাই। পূর্ববিরোধের কারণে সিরাজ মিয়া দীর্ঘদিন এলাকায় আসতেন না। শুক্রবার তাঁর আরেক চাচাতো ভাইয়ের মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে সপরিবার গ্রামের বাড়ি আসেন।
খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক সরকারের অনুসারীরা শুক্রবার রাত ৮টার দিকে সিরাজ মিয়া ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় সিরাজ মিয়ার বড় ভাই আবদুস সালামের স্ত্রী নাজমা আক্তার ঘটনাস্থলেই মারা যান। তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছেন মেঘনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হারুন অর রশিদ।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শনিবার নাজমা আক্তারের দাফন সম্পন্ন হয়। এরপর রাতে বাবা হুমায়ুন কবীরকে ফোন দিয়ে ফুফুর মৃত্যুর খবর জানান রাব্বি। হুমায়ুন কবীর ছেলের কাছে বোনের মৃত্যুর খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
পুলিশ জানিয়েছে, গৃহবধূ নাজমাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশ ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক সরকার ও তাঁর অনুসারীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শনিবার ভোররাতে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে। গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সিরাজ মিয়া বাদী হয়ে হত্যা মামলা ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি পৃথক মামলা হয়েছে। দুটি মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক সরকারকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
মেঘনা থানার ওসি আবদুল মজিদ বলেন, হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি দেলোয়ার হোসেনকে (৪২) মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ তাঁকে কুমিল্লা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page